<p><span style="font-weight: 400;"><strong>নয়াদিল্লি:</strong> আগের নিষেধাজ্ঞা এখনও কার্যকর রয়েছে। সেই আবহেই রাশিয়ার উপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা চাপাল আমেরিকা। রাশিয়ার দুই বৃহত্তম তৈল সংস্থাকে নিষিদ্ধ করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বন্ধ না করাতেই এই বাড়তি নিষেধাজ্ঞা বলে জানিয়েছে মস্কো। এতে রাশিয়াকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করা যাবে কি না, সেই নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ চলছে যেমন, তেমনই এই বাড়তি নিষেধাজ্ঞার ফলে চিন এবং ভারতের মতো দেশ রাশিয়ার থেকে তেল কেনা থেকে পিছু হটতে পারে বলেও জল্পনা চলছে। (Russian Oil Sanctions)</span></p> <p><span style="font-weight: 400;">রাশিয়ার দুই বৃহত্তম তৈল সংস্থা, Rosneft এবং Lukoil-কে নিষিদ্ধ করেছে আমেরিকা। তাদের ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, যুদ্ধ থামানো নিয়ে একেবারেই ‘সিরিয়াস’ নন পুতিন। তাই ওই দুই সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হল। এতে যুদ্ধ চালানোর অর্থ জোগাতে হিমশিম খাবে ক্রেমলিন। Rosneft একটি রাষ্ট্রায়াত্ত তৈল সংস্থা, যার মাথায় রয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ ইগর সেকচিন। Lukoil বেসরকারি সংস্থা হলেও, দেশের প্রায় অর্ধেক অশোধিত তেল তারা বিদেশে রফতানি করে। প্রতিদিন ৩১ লক্ষ ব্যারেল তেল রফতানি করে ওই দুই সংস্থা। রাশিয়ায় মোট যত তেল উৎপন্ন হয়, তার অর্ধেকই প্রায় উৎপন্ন করে Rosneft. পৃথিবীর মোট চাহিদার ৬ শতাংশ তারা একাই মেটায়। তেল খুঁজে বের করা থেকে তার উত্তোলন, উৎপাদন, শোধন, পরিবহণ, পেট্রোল, প্রাকৃতিক গ্যাস এবং পেট্রোপণ্য উৎপা করে ওই সংস্থা। Lukoil-ও তৈল উৎপাদনের পাশাপাশি শোধন, মার্কেটিং, তেল ও গ্যাস রফতানি করে। দেশের অন্দরে এবং বিদেশে বিপুল ব্যবসা তাদের। (US Sanctions on Russia)</span></p> <p><span style="font-weight: 400;">প্রায় তিন বছর ধরে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ চললেও, এতদিনে ওই দুই সংস্থাকে নিষিদ্ধ করা হল। বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব পড়তে পারে ভেবেই আমেরিকা এবং তাদের শরিক দেশগুলি এব্যাপারে কুণ্ঠা করছিল। কিন্তু সম্প্রতি ট্রাম্পের তরফে চাপসৃষ্টি করা হয়। পুতিন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হওয়ায় আর কোনও উপায় নেই বলে জানানো হয় NATO-শরিকদের। এমতাবস্থায় এক সপ্তাহ আগেই Rosneft এবং Lukoil-এর উপর নিষেধাজ্ঞা চাপায় ব্রিটেন। প্রথমে জানা যায়, বুদাপেস্টে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পরই সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প। শেষ পর্যন্ত ওই বৈঠক বাতিল হয় এবং তার পরই বাড়তি নিষেধাজ্ঞা চাপানো হল। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও এতদিন ওই দুই সংস্থাকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলছিলেন। তাঁর দাবি ছিল, তেল বিক্রির টাকায় যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া।</span></p> <p><span style="font-weight: 400;">রাশিয়ার দুই বৃহত্তম তৈল সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করায় রাশিয়ার অর্থনীতি যেমন ধাক্কা খাবে, তেমনই চিন এবং ভারতের মতো দেশও সমস্যায় পড়তে পারে। কারণ এই মুহূর্তে রাশিয়ার কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি তেল কিনছে চিন এবং ভারতই। গত বছর চিন একাই রাশিয়ার কাছ থেকে ১০ কোটি অশোধিত তেল কেনে, যা তাদের মোট আমদানিকৃত তেলের ২০ শতাংশ। একই ভাবে, ২০২২ সালে রাশিয়া বনাম ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর, মোটা ডিসকাউন্টে রাশিয়ার থেকে তেল কেনায় বাকিদের ছাপিয়ে গিয়েছে ভারত। চলতি বছরের প্রথম ন’মাসে রাশিয়ার কাছ থেকে দিনে ১৭ লক্ষ ব্যারেল তেল কিনেছে দিল্লি। এর দরুণ ভারতের উপর বাড়তি শুল্কও চাপান ট্রাম্প। সেই নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলাপ আলোচনা চলছে। ট্রাম্পের দাবি, আর রাশিয়ার থেকে তেল কেনা হবে না বলে তাঁকে কথা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আমদানির পরিমাণ কিছুটা কমসেও, দিল্লির তরফে এমন কোনও ইঙ্গিত মেলেনি যদিও এখনও পর্যন্ত। </span></p> <p><span style="font-weight: 400;">তবে নতুন করে রাশিয়ার দুই সংস্থাকে আমেরিকা নিষিদ্ধ করায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ভারতের সরকারি তৈল সংস্থাগুলি ইতিমধ্যেই নথিপত্র দেখতে শুরু করেছে। সরাসরি যাতে Rosneft এবং Lukoil থেকে তেল ভারতে এসে না পৌঁছয়, তার রাস্তা বের করা হচ্ছে। Indian Oil, Bharat Petroleum, Mangalore Refinery and Petrochemicals-এর তরফে সেই নিয়ে কাজ চলছে, যাতে সরাসরি Rosneft বা Lukoil থেকে জাহাজ এসে না পৌঁছয়। Reliance-এর মতো বেসরকারি সংস্থাও রাশিয়ার থেকে তেল কেনা কমাতে পারে। সরকারি তৈল সংস্থাগুলি ইতিমধ্যেই রাশিয়ার থেকে তেল আমদানি কমিয়ে দিয়েছে। Rosneft এবং Lukoil-এর থেকে তেল কেনা হলেও, খুব কম সময়ই তা সরাসরি কেনা হয়। বরং মধ্যস্থতাকারী কোনও সংস্থা থাকে মাঝে। তবে এক আধিকারিককে উদ্ধৃত করে Bloomberg জানিয়েছে, নতুন নিষেধাজ্ঞায় রুশ তেলের জোগান কমতে বাধ্য। ২০২২ সালের আগে ভারত রাশিয়ার থেকে সেভাবে তেল কিনতও না। বরং তেলের ক্ষেত্রে পশ্চিম এশিয়ার উপরই নির্ভরশীল ছিল ভারত। মোটা ডিসকাউন্ট মেলাতেই গত কয়েক বছরে রাশিয়ার থেকে তেল কেনার পরিমাণ বাড়ানো হয়। Bloomberg জানিয়েছে, আমেরিকা ওই দুই সংস্থাকে নিষিদ্ধ করায় আপাতত সব অর্ডার বাতিল করতে হবে। খুঁজতে হবে বিকল্প উপায়।</span></p>
from india https://ift.tt/F1TzJdg
via IFTTT
0 Comments